ইন্টারনেট কি? ইন্টারনেটের ব্যাসিক জ্ঞান
ইন্টারনেট কি? ইন্টারনেটের ভূমিকা ও সংজ্ঞাঃ
Internet শব্দটির সন্ধি বিশ্লেষন হবে Inter+net. Inter মানে হলো Interconnected আর নেট মানে হলো Network. অর্থাৎ ইন্টারনেট মানে হলো Interconnected Network. ইন্টারনেটের বাংলা অর্থ হচ্ছে আন্তজাল। ইন্টারনেটের সংজ্ঞা হবে এরকমঃ
"যে প্রক্রিয়ায় শুধু একটি কম্পিউটার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সারা পৃথিবীর সকল কম্পিউটারকে এমনভাবে একে অপরের সাথে যুক্ত করা যায় যাতে তারা একে অপরের মধ্যে তথ্য আদান প্রদান করতে পারে তাকে ইন্টারনেট বলে।"
আরও পড়ুনঃ কিভাবে ফ্রিতে ওয়েবসাইট তৈরি করবেন?
ইন্টারনেট এর ইতিহাসঃ
১৯৬০-এর দশকে মার্কিন সামরিক বাহিনীর গবেষণা সংস্থা অ্যাডভান্সড রিসার্চ প্রজেক্টস এজেন্সি বা আরপা (ARPA) পরীক্ষামূলকভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কিছু বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণাগারের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলে। প্যাকেট সুইচিং পদ্ধতিতে তৈরি করা এই নেটওয়ার্ক আরপানেট (ARPANET) নামে পরিচিত ছিল। এতে প্রাথমিকভাবে যুক্ত ছিল। ইন্টারনেট ১৯৮৯ সালে আইএসপি দ্বারা সবার ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। ১৯৯০ এর মাঝামাঝি থেকে ১৯৯০ এর পরবর্তি সময়ের দিকে পশ্চিমাবিশ্বে ইন্টারনেট ব্যাপক ভাবে বিস্তৃত হতে থাকে।
ইন্টারনেট কিভাবে কাজ করে?
ইন্টারনেট সাধারণত ২ ভাবে কাজ করে। এগুলো হলোঃ
- ১)স্যাটেলাইট এর মাধ্যমে(১%)
- ২)অপটিকাল ফাইবারের মাধ্যমে(৯৯%)
১)স্যাটেলাইটের মাধ্যমে কিভাবে ইন্টারনেট চলে?
![]() |
| চিত্রঃস্যাটেলাইট |
কমুনিকেশন স্যাটেলাইট ব্যবহার করে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে রেডিও সিগন্যালকে পাঠানো হয়। আর স্যাটেলাইট ইন্টারনেট অনেকটা এভাবেই কাজ করে। পৃথিবীর কোন এক প্রান্ত থেকে কোন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রভাইডার ইন্টারনেট ডিজিটাল রেডিও সিগন্যালকে স্যাটেলাইটের দিকে ছুড়ে মারে (স্যাটেলাইট ডিশ এন্টেনা থেকে), সেই সিগন্যালকে স্যাটেলাইট গ্রহন করে এবং সিগন্যালকে আরো শক্তিশালি বানিয়ে আবার পৃথিবীর দিকে ছুড়ে মারে, এবার দ্বিতীয় ডিশ এন্টেনা সেই সিগন্যাল গ্রহন করে এবং আপনি ইন্টারনেট উপভোগ করতে পারেন। স্যাটেলাইট রেডিও সিগন্যালে প্রায় যেকোনো ধরনের তথ্য আদান প্রদান করানো সম্ভব, যেমন ইন্টারনেট সিগন্যাল, সেলফোন কল, টিভি ব্রডকাস্ট সিগন্যাল, রেডিও ব্রডকাস্ট সিগন্যাল ইত্যাদি। তবে এটি অনেক কঠিন ও ব্যয়বহুল। এবং স্যাটেলাইট পৃথিবী থেকে অনেক দূরে। তাই সিগনালে সমস্যা হয়।
২)অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমেঃ
ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত হয় অপটিকাল ফাইবার। কারণ এই অপটিকাল ফাইবার শুধু স্থাপন করলেই হয়। আর কাজ করা লাগে না। অপটিকাল ফাইবার হলো এক ধরণের সরু কাচতন্তু বিশিষ্ট তার। যার মধ্য দিয়ে আলোক রশ্মির মাধ্যমে তথ্য আদান প্রদান করা হয়। এটি সাধারণত মাটির নিচে বা সমুদ্রের তলদেশে স্থাপন করা হয়।অপটিক্যাল ফাইবারগুলো খুব সরু হলেও এগুলোর ডাটা ট্রান্সফার ক্ষমতা ৬ জিবিপিস পর্যন্ত। অপটিকাল ফাইবার এর কাজটি ৩ টি ধাপে সম্পন্ন হয়। প্রত্যেকটি ধাপকে টিয়ার বলে। এগুলো হলোঃ
টিয়ার ১ঃ সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে অপটিক্যাল ফাইবার বিছানোর কাজগুলো যে কোম্পানি করে থাকে তাদেরকে টিয়ার-১ কোম্পানি বলা হয়। টিয়ার-১ কোম্পানিগুলো তাদের নিজস্ব খরচে অপটিক্যাল ফাইবার বিছিয়ে থাকে। বাংলাদেশে এমনই একটি টিয়ার-১ কোম্পানি হলো বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবল কোম্পানী লিমিটেড।
টিয়ার ২ঃটিয়ার-২ কোম্পানিগুলো হলো প্রত্যেক দেশের সিম অপারেটররা। তেমনি বাংলাদেশের বিভিন্ন সিম অপারেটর যেমন রবি, গ্রামীণফোন, এয়ারটেল, টেলিটক ইত্যাদি হলো টিয়ার-২ কোম্পানি। ল্যান্ডিং পয়েন্ট থেকে তথ্য নিয়ে সেগুলো গ্রাহকের মোবাইল ফোনের সার্ভারে পৌঁছে দেয়াই হলো টিয়ার-২ এর কাজ। টিয়ার-২ কোম্পানিগুলো প্রতি জিবিতে একটি নির্দিষ্ট টাকা হিসেব করে টিয়ার-১ কোম্পানিগুলোকে দেয়।
টিয়ার ৩ঃ টিয়ার ১ ও টিয়ার ২ ছাড়াও বিভিন্ন লোকাল পর্যায়ে বিভিন্ন ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার বা আইএসপি রয়েছে যারা মূলত টিয়ার-৩ কোম্পানি।
প্রকৃতপক্ষে টিয়ার ওয়ান, টিয়ার টু এবং টিয়ার থ্রি এই তিন স্তরের মাধ্যমে ইন্টারনেট আমাদের হাত পর্যন্ত আসে। একটু চিন্তা করলেই বোঝা যায় ইন্টারনেটের জন্য আসলে কোনো খরচ নেই! আমরা যা অর্থ খরচ করি তা শুধুমাত্র সমুদ্রের নিচে ক্যাবল বিছানো বা স্থাপন ও মেরামত করার জন্য। আর এতো কিছু জানার পর আমরা সহজেই বুঝতে পারছি যে এখানে স্যাটেলাইটের কোনো কাজ নেই।
আর যেহেতু স্যাটেলাইটের থেকে অপটিক্যাল ফাইবারের খরচ কম তাই এটির ব্যবহার স্যাটেলাইটের চাইতে তুলনামূলক ভাবে অনেক বেশি।
তো এই ছিলো আজকের মতো। আশা করি পোস্টটি ভালো লেগেছে। আর যদি ভালো লেগে থাকে তবে একটা সুন্দর কমেন্ট করুন। এবং পোস্টটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন। ধন্যবাদ পোস্টটি পরার জন্য। আশা করি ভালো থাকবেন। খোদা হাফেজ।


Nice
উত্তরমুছুন