ফেসবুক আইডি সিকিউরিটি টিপস। How to improve facebook security bangla tutorial?
আসসালামু আলাইকুম দর্শক।আশা করি ভালো আছেন। কিন্তু জীবনের কিছু সমস্যার কারণে অনেক সময় ভালো থাকাটা আর হয় না। যেমন ধরেন ফেসবুকের কারণে। খুব আজেবাজে বকবক করতেছি। তাই না। তো ঠিক আছে আর বকবক করবো না। চলুন আসল কথায় আসি। আমাদের বিষয়।ফেসবুক আইডি সিকিউরিটি টিপস।
মনে করেন আপনি একদিন রাতে ফেসবুক চালাতে চালাতে ঘুমালেন। ভেরে উঠলেন। ব্রাশ করলেন। খাওয়া দাওয়া করলেন। ছাত্র বা ছাত্রী হলে আপনি পড়াশুনা করলেন। বা আপনি যদি জব করেন তাহলে জব করতে গেলেন। এরপর সারাদিন আপনার কাজ সেরে বাসায় আসলেন। রেস্ট নিলেন। এরপর আপনি ভাবলেন যে সারাদিনতো কাজ করেছি।এবার একটু বিনোদোনের পালা। তো আপনি সোজাসুজি ভাবে আপনার মেবাইল বা ল্যাপটপ বা কম্পিউটারের মাধ্যমে ফেসবুকে ঢুকলেন। কিন্তু হঠাৎ একটা মেসেজ আসলো যে "আপনি আপনার পাসওয়ার্ডটি পুনরায় টাইপ করুন। এসময় আপনার মনে প্রশ্ন আসল যে " আমিতো এখানে আগে থেকেই লগ ইন করা ছিলাম।তাহলে পাসওয়ার্ড কেনো চাচ্ছে। তো আপনি তেমন একটা ভয় পেলেন না। আপনি পাসওয়ার্ড দিলেন। কিন্তু মেসেজ আসছে যে "Wrong Password. Please try again " তো আপনি আবার দিলেন পাসওয়ার্ড।কিন্তু তারপরও একই কথা। তো এবার আপনি কি করলেন।আপনি "forget password" এ ক্লিক করলেন। তা ভালো।কিন্তু এরপর যেটা আসলো সেটা অকল্পনীয়। আপনি যেই ইমেইল বা নাম্বার দিয়ে ফেসবুক আইডি খুলেছেন সেটা এখানে show করতেছেনা। এখন আপনার কি হবে। আপনার বাড়ি আসার পর যে বিনোদন তা তো জলে গেলোই।সাথে ফেসবুক আইডিটাও। এত বড় বর্ণনা দেয়ার জন্য sorry. তো আপনার সাথে যদি এটা ঘটে থাকে তবে বুঝবেন যে আপনার ফেসবুক আইডিটি কোনো অসাধু হ্যাকার হ্যাক করেছে। কেনো হ্যাক করতে পেরেছে? কারণ আপনি ফেসবুক আইডি সিকিউরিটি টিপসগুলো ফলো করেননি। তো চলুন এবার মূল পর্বে আসা যাক।
কিভাবে বুঝবেন যে আপনার আইডিটিতে সিকিউরিটি নেইঃ
১) হয়তো আপনি কোনো পাবলিক ওয়াইফাই তে বা পাবলিক নেটওয়ার্কে লগ ইন করেছেন।
২)আপনি অন্য কারো ফোনে লগইন করেছেন।
৩)আপনার পাসওয়ার্ড হল আপনার নাম বা আপনার স্ত্রীর নাম বা বান্ধবীর নাম বা আপনার প্রিয় বন্ধুর নাম বা আপনার পাসওয়ার্ড আপনার নাম ও পরে ১২৩
৪)আপনার ট্রাস্টেড কন্টাক্ট অন করা নেই
৫)আপনার আইডিতে লগ ইন নোটিফিকেশন অন করা নেই।
৬)আপনার আইডিতে 2 factors authintication অন করা নেই।
৭)আপনি ফেসবুক অ্যাপ বা ফেসবুক অফিশিয়াল ওয়েবসাইট ছাড়া অন্য কোনো অ্যাপে বা ওয়েবসাইটে লগ ইন করেছেন।
৮)আপনি আপনার আইডিটে অটো লাইক ব্যবহার করেন।
৯)আপনার আইডি ভেরিফাই করা নয়
১০)আপনার পাসওয়ার্ড বদলানোর অভ্যাস নেই।
তো বুঝেই গেলেন আমাদের আইডি কিভাবে হ্যাক হতে পারে। তো চলুন এবার জানবো
কিভাবে ফেসবুক আইডি সিকিউরিটি বাড়ানো যায়
১) ফেসবুক আইডিতে সিকিউরিটি বাড়ানোর জন্য লগইন বিষয় নিয়ে খেয়াল রাখুন
আপনি সবসময় আপনার ফোনের নেটওয়ার্ক ও আপনার নিজস্ব ওয়াইফাই ছাড়া অন্য কোনো পাবলিক place বা বন্ধুর বাসার ওয়াইফাইতে লগইন করবেন না। আর যদি তা করেন তবে এরপর বাসায় এসে তাড়াতাড়ি আগে ফেসবুক পাসওয়ার্ড বদলাবেন। তাছাড়া আপনি যদি কোনো সাইবার ক্যাফেতে যান।এবং সেখানে লগ ইন করেন।তাহলে আসার সময় অবশ্যই লগ আউট করবেন।না হলে আপনার পাসওয়ার্ড সেখানে থাকবে ও আপনি আপনার আইডি আর ফিরে পাবেননা।
২) অন্য কারও ফোনে লগইন করবেন নাঃ
আপনি হয়তো মনে করতে পারেন যে ওতো আমার বন্ধু। দেখি ওর ফোনে লগইন করি। একটু ফেসবুক চালাই। আপনি তাকে বিশ্বাস করে চালাতে লাগলেন।আসার সময় লগ আউট করলেন। কিন্তু তারপরও আপনার আইডি হ্যাক। কারণ কি জানেন। ওর ফোনে কি-লগার ছিল। কি লগার হল এমন একটা জিনিস যা আপনি আপনার কি বোর্ডে যা টাইপ করবেন সব অটো সেইভ হয়ে যাবে এবং আপনি পরে সেগুলো দেখতে পারবেন। তো ফেসবুক সিকিউরিটির জন্য আমি বলবো নিজের ফোন ছাড়া কারো ফোনে লগ ইন করবেন না।
৩)ফেসবুক আইডির সিকিউরিটি বাড়ানোর জন্য কমন পাসওয়ার্ড ইউজ করা বাদ দিনঃ
আপনি মনে মনে ভাবলেন।আমি তো একজন সাধারণ মানুষ। আমার আইডি কে হ্যাক করবে। তাই আপনি কমন পাসওয়ার্ড ইউজ করলেন। আবার আপনি ইচ্ছা করেও কমন পাসওয়ার্ড ইউজ করলেন। আপনার পাসওয়ার্ড হতে পারে এরকমঃ rafin123 বা rafinbandhobi বা ihavetogo বা iloveyou বা এই ধরেন আপনার পাসওয়ার্ডের ভিতরে আপনার নাম,আপনার বান্ধবীর নাম বা স্ত্রীর নাম আছে।অথবা আপনার মোবাইল নাম্বার আছে। তাহলে আপনার আইডি হ্যাক করতে ৩ মিনিটের বেশি লাগবে না। তো আপনি যদি এইসব পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেন তাহলে ভাই আপনি এইসব পাসওয়ার্ড ব্যবহার করা ছেড়ে দেন। আপনার ফেসবুকের পাসওয়ার্ডে একটা ইংরেজি শব্দ+সংখ্যা+চিহ্ন(ex:@#৳&-+&) রাখুন। এতে করে আপনার ফেসবুক আইডি এর সিকিউরিটি বাড়বে।
৪) আপনি ফেসবুক অ্যাপ বা ওয়েবসাইট ছাড়া অন্য কোনো অ্যাপ বা ওয়েবসাইটে লগইন করবেন না।
ফেসবুক আইডি হ্যাক করার জন্য কিছু অসাধু হ্যাকার ফিশিং পেজ বা অ্যাপ বানায়। আর সেগুলোর প্রচার করে যে " ফ্রিতে ছবিসহ ফেসবুক। অ্যাপ ব্যবহার করলে ফ্রিতে টাকা দেবে।" তো আপনারা কখনোই ওইসব ওয়েবসাইট বা অ্যাপে লগইন করবেন না। আপনারা ফেসবুকের অফিশিয়াল অ্যাপ ব্যবহার করবেন। এবং অফিশিয়াল ওয়েবসাইট "www.facebook.com" ব্যবহার করবেন। আর নয়তো সমস্যা আপনারই হবে।
৫) আপনার আইডিতে কখনোই অটেলাইক নিবেন নাঃ
অটো লাইক কি? অটো লাইক হলো যে আপনি আপনার পোস্টে কোনো ওয়েবসাইট থেকে অটে লাইক দিয়ে আপনার পোস্টের লাইক বাড়িয়ে নিলেন।
লাইক বাড়ানোর জন্য তো আপনার লগইন করা লাগবে। আপনি সেখানে লগ ইন করলেন। ব্যাস কাম শেষ। আপনার আইডি ও পাসওয়ার্ড তাদের কাছে গেলো। আমি বলবো যে কোনো অটো লাইকার সেফ নয়। তাই আপনারা কখনোই অটো লাইক ইউজ করবেন না।
৬) নিয়মিত পাসওয়ার্ড বদলানোর অভ্যাসঃ
আপনি সেই ২০০৯ সালে আপনার ফেসবুক আইডিতে যে পাসওয়ার্ড দিয়েছেন বা যেইসময় খুলেছেন সেইসময় যে পাসওয়ার্ড দিয়েছেন এখনো সেইটা। আপনি তো লোক ভালো না। আপনার আইডি হ্যাক হওয়ার সম্ভাবনা আছে। আপনাকে আইডি সিকিওর রাখতে হলে অন্তত প্রতি মাসে একবার হলেও পাসওয়ার্ড বদলাতে হবে। নাহলে আপনি পস্তাবেন।
এবার আসা যাক স্পেশাল কিছু কথায়। যার মাধ্যমে ফেসবুক সিকিউরিটি আরও বিশ গুণ বাড়ানো যায়।
স্পেশাল টিপস ১ঃ Trusted contact on রাখুন।
মনে করেন আপনার আইডিতে সিকিউরিটি নেই। আপনার আইডি হ্যাক করে হ্যাকার ইমেল,নাম্বার ও পাসওয়ার্ড বদলে ফেলেছে। তো এখন আপনার কিছু করার নেই। কিন্তু আপনার যদি ট্রাস্টেড কন্টাক্ট অন থাকে তবে আপনি খুব সহজভাবে আপনার আইডি ফিরে পাবেন। তো ট্রাস্টেড কন্টাক্ট এর নিয়ম হল আপনি আপনার ৩ জন বা ৪ জন বন্ধুকে ট্রাস্টেড কন্টাক্টে রাখবেন। আপনার আইডি কেউ হ্যাক করলে নাম্বার ও পাসওয়ার্ড বদলালে আপনি লগইন করার সময় ট্রাস্টেড কন্টাক্ট এর অপশন পাবেন।(যদি অন করা থাকে) সেখানে আপনি ক্লিক করলে যাদেরকে আপনি কন্টাক্টে রেখেছেন তাদের কাছে কোড যাবে। তে আপনি খুব সহজে তাদের সাথে যোগাযোগ করে কোড এনে কোড বসালে আপনার আইডি আবার ফিরে পাবেন। তো বুঝলেন ট্রাস্টেড কন্টাক্ট এর গুরুত্ব। এতে করে আপনার ফেসবুক আইডির সিকিউরিটি আরও একধাপ বাড়বে।
স্পেশাল টিপস ২ঃ লগ ইন অ্যালার্ট অন রাখুন
লগ ইন অ্যালার্ট হলো যে আপনার ডিভাইস ছাড়া অন্য কোনো ডিভাইসে কেউ আপনার আইডিতে লগইন করলে আপনার কাছে নোটিফিকেশন চলে আসবে। এবং আপনি তাৎক্ষণিকভাবে কিছু পদক্ষেপ নিতে পারেন।এতে করে আপনার ফেসবুক আইডির সিকিউরিটি আরও একধাপ বাড়বে।
স্পেশাল টিপস ৩ঃ ডিভাইস চেক করুন
ফেসবুকে একটা অপশন আছে যে " where you have logged in" সেই অপশনে ক্লিক করুন। সেখানে যদি আপনার ডিভাইস ছাড়া অন্য কোনো ডিভাইস দেখতে পান তবে লগ আউট অফ অল সিজনস এ ক্লিক করুন। এতে করে আপনার ফেসবুক আইডির সিকিউরিটি আরও একধাপ বাড়বে।
স্পেশাল টিপস ৫ঃ login approval অনঃ
এটা এমন একটা মাধ্যম যার মাধ্যমে আপনি আপনার আইডির পাসওয়ার্ড কাউকে দিলেও সে লগ ইন করতে পারবে না। অর্থাৎ আপনি ছাড়া আর কেউ লগ ইন করতে পারবে না। এটা কেমন? এটা হলো যে আপনি আপনি আপনার আইডি ও পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করার পর আপনার সিমে ফেসবুক একটা কনফার্ম কোড পাঠাবে। আপনি সেই কোড টা দিলে আপনাকে লগ ইন করতে দিবে। আর নয় দিবেনা। তো বুঝতেই পারছেন কতটা সিকিওর হবে আপনার আইডি। এতে করে আপনার ফেসবুক আইডির সিকিউরিটি আরও একধাপ বাড়বে।
তো দর্শক এই ছিল আজকের মতো। আশা করি পোস্টটি ভালো লেগেছে। তবে ফেসবুক সিকিউরিটির আরেকটা টিপস আছে। সেটা হলো আপনি এই পোস্টটা যত শেয়ার করবেন। আপনার আইডির সিকিউরিটি তত বাড়বে। একটু মজা করলাম। তো এই ছিল আমাদের আজকের পোস্ট ফেসবুক আইডি সিকিউরিটি টিপস। আশা করি ভালো লেগেছে। ভালো লাগলে কমেন্ট করুন ও বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করুন। আপনি যত বেশি শেয়ার করবেন। আপনার বন্ধুরা তত উপকৃত হবে। তাই পোস্টটি বেশি বেশি শেয়ার করেন। এবং সুন্দর একটা কমেন্ট করতে ভুলবেন না। সবসময় ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়বেন। খোদা হাফেজ। আবার পড়ে দেখা হবে অন্য কোনো পোস্টে। ততক্ষণ ভালো থাকবেন সুস্থ থাকবেন আর ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়তে ভুলবেন না।
কোন মন্তব্য নেই